স্টাফ রিপোর্টার :যশোর শিক্ষা বোর্ডে গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মকর্তা নেই। এক বিভাগের কর্মকর্তাকে নিজের দায়িত্বসহ আরেক পদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ফলে তাকে একই সাথে দুই বিভাগের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এ কারণে সেবা প্রদান করতে যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে। সেবা গ্রহিতারাও ঠিকমত সেবা পাচ্ছে না।
সেবা নিতে আসা অনেকেই জানেন না পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, হিসাব শাখা ও প্রধান মূল্যায়ন অফিসারের দায়িত্বে কোনো কর্মকর্তা। কার কাছে গেলে সেবা মিলবে?
তবে যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বললেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের কর্মকর্তারা কষ্ট হলেও সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এতে কোনো ঘাটতি নেই। আমাদের হাতে নিয়োগ দেয়ার ক্ষমতা নেই। একারণে একজন কর্মকর্তাকে দিয়ে দুই বিভাগের দায়িত্বপালন করাতে হচ্ছে। জনবল পূরণ করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জানানো হচ্ছে। সেখান থেকে অনুমতি না এলে নিয়োগ দেয়া যাচ্ছে না।’
বোর্ড সূত্র জানায়, গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর অবসরে গেছেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্র। ওই পদে কোন কর্মকর্তা ডেপুটিশনে দায়িত্ব দেয়া হয়নি। কলেজ পরিদর্শক কেএম রব্বানীকে এ বছর ৪ জানুয়ারি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তাকে একই সাথে কলেজ পরিদর্শক ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। বোর্ডের পরীক্ষা শাখার কাজে আসা শিক্ষক শিক্ষার্থীরা অনেকেই জানেন না কার কাছে গেলে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাজ করানো যাবে। প্রায় তাদেরকে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে।
কলেজ পরিদর্শক কে এম রব্বানী জানান, ‘যখন যে বিভাগে কাজ থাকছে সেখানে গিয়ে করছি। যেহেতু চেয়ারম্যান স্যার আমাকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের চলতি দায়িত্ব দিয়েছেন সে কারণে আমাকে কলেজ পরিদর্শকের দায়িত্বসহ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।’
যশোর শিক্ষা বোর্ডে গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ হিসাব বিভাগ। গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর পরীক্ষা শাখার হিসাব ও নিরীক্ষা কর্মকর্তা যশোর সরকারি কলেজে বদলি হয়ে যান। ওই দিনই উপকলেজ পরিদর্শক মোদন মোহন দাসকে হিসাব ও নিরীক্ষা শাখার চলতি দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। নতুন কোন কর্মকর্তাকে ডেপুটেশনে দায়িত্ব দেয়া হয়নি। অথচ ২০২২ সালে ওই বিভাগের হিসাব সহকারী সালামের কারনে বোর্ডে ৭ কোটি টাকার চেক জালিয়াতির ঘটনা ঘটে। আর এই পদে উপকলেজ পরিদর্শককে চলতি দায়িত্ব দেয়া অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের মাঝে নানা প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে।
ওই বছরে অবসরে গেছেন প্রধান মূল্যায়ন অফিসার মিজানুর রহমান। তার স্থানে দায়িত্ব পালন করছেন উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ( উচ্চ মাধ্যমিক) সমীর কুমার কুন্ডু। অফিসার ইমাম আব্দুল্লাহকে ইমামের দায়িতের পাশাপাশি প্রশাসন ও লাইব্রেরী শাখার অতিরিক্ত দায়িত্বপালন করতে হচ্ছে। এছাড়া উচ্চমান সহকারীদের দিয়ে ভারপ্রাপ্ত সেকশন অফিসারের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।
বোর্ডের প্রশাসন শাখা থেকে জানা গেছে, বোর্ডে ২৫৩ পদের মধ্যে শূন্য আছে ১৩৪ টি। ১১৯ পদে কর্মকর্তা কর্মচারী কর্মরত আছেন। শূন্য পদগুলোর মধ্যে ৫৮টি পদ পদন্নোতির যোগ্য। বাকি ৭৬টি পদের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ দেয়া বোর্ডের ক্ষমতার মধ্যে। সেখানেও নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না।
যশোর শিক্ষা বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা দুই বিভাগের দায়িত্বে !
